নিজস্ব প্রতিনিধিঃ লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে ওয়ার্ড মহিলালীগের সভাপতি আমেনা বেগমের (৪৫) বসতঘরে স্থানীয় আরমানের নেতৃত্বে ১৫-২০ হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এসময় হামলাকারীদের আঘাতে আহত হন আমেনা বেগম, তার মেয়ে রুমা আক্তার (২৬), মীম আক্তার (১৩) ও ছেলে মোঃ রায়হান (১৪)। এসময় স্থানীয় এলাকাবাসী গুরুতর আহত অবস্থায় রায়হান ও রুমাকে উদ্ধার করে রামগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে। বাকীদের স্থানীয় গ্রাম্য ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাত ৭টার দিকে উপজেলার ১নং কাঞ্চনপুর ইউপির ৪নং ওয়ার্ড ব্রহ্মপাড়া খন্দকার বাড়িতে। সৃষ্ট ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা যায়। ভুক্তভোগী আমেনা বেগম ব্রহ্মপাড়া ওয়ার্ড মহিলালীগের সভাপতি এবং প্রবাসী মোঃ আজাদ হোসেনের স্ত্রী। এসময় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন, রামগঞ্জ থানা পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আমেনা বেগমের ছেলে রায়হানের সাথে স্থানীয় মুইচ্চার বাড়ির মোঃ মোস্তফার ছেলে আরমানের সাথে গত কয়েকদিন আগে তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটে। পরবর্তিতে সাবেক ইউপি সদস্য রহমতউল্যাহ ও ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা মোরশেদ আলমের নেতৃত্বে উক্ত বিষয়টি সমাধান করা হয়। পরে ঘটনার দিন শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ওই ঘটনার সূত্র ধরে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে আবারো বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে রায়হান ও আরমান।
ভুক্তভোগীরা জানায়, রাতে আরমানের নেতৃত্বে স্থানীয় ইলমুন, রিয়াদ, পারভেজ, মিঠু, রাকিব, নিলয়, সবুজ, রাজুসহ ১৫-২০ জন যুবক দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে রায়হানের বসতঘরে হামলা ও ভাংচুর চালিয়ে আমেনা বেগম, রায়হান, রুমা ও মীমকে আহত করে। এসময় ঘরে থাকা নগদ অর্থ ও রুমা আক্তারের গলা থেকে স্বর্নের চেইন চিনিয়ে নিয়ে যায় বলে জানায় ভুক্তভোগীরা। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় রায়হান ও রুমা আক্তারকে উদ্ধার করে রামগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে স্থানীয়রা।
এদিকে ওয়ার্ড মহিলালীগের সভাপতি আমেনা বেগমসহ ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার এমরান হোসেনের ইন্ধনে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। এমরান কোন সঠিক বিচার করেনা।
তবে এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবী করে ইউপি সদস্য এমরান হোসেন জানান, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার স্বীকার। গত কয়েকদিন আগে আমেনা বেগমের ছেলে রায়হান, আরমানকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে। পরে বিষয়টি আমি জানতে পারি। এসময় বিষয়টি আমি ও ইউপি চেয়ারম্যান মহোদয় বসে সুষ্ঠু বিচার করে দিবো বললে আরমানের পরিবার মামলা করেনি। কিন্তু পরবর্তিতে আমাকে কোন কিছু না জানিয়ে সাবেক মেম্বার রহমতউল্যাহ ও যুবলীগ নেতা মোরশেদ বিষয়টি মিমাংশা করে দেয় বলে জানতে পারি। এছাড়াও খেলাকে কেন্দ্র করে আবারো যে হামলার ঘটনা ঘঠেছে, সে বিষয়েও আমি কিছু জানিনা। আমি ঘটনার দিন হাজিগঞ্জে ছিলাম। পরবর্তিতে এ এস আই বেলায়েত ভাইয়ের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারি। এ ঘটনার সাথে আমার সম্পৃক্ততা থাকলে যেকোন আইনি বিচার মাথা পেতে নিবো। এ হামলার ঘটনা যারা ঘটিয়েছে, আমিও ছাই তাদের বিচার হোক।
সাবেক ইউপি মেম্বার রহমত উল্যাহ পূর্বের ঘটনাটি সমাধান করে দেওয়ার কথা স্বীকার করে জানান, ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবারো কেউ যদি ঝামেলায় জড়ায়, তাহলে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে এমন সিন্ধান্ত হয়। তবে বসতঘরে হামলার বিষয়টি কি কারনে ঘটেছে, সে বিষয়ে তিনি কিছুই জানেনা বলে জানান।
ইউপি চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন খাঁন জানান, আমেনা বেগমের বসতঘরে হামলার বিষয়টি শুনেছি। তবে কি কারনে হামলার ঘটনা ঘটেছে, জানিনা। জেনে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
রামগঞ্জ থানার ওসি মোঃ এমদাদুল হক জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। তবে এ বিষয়ে এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ ফেলে আইগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।